বৃষ্টির ছোঁয়াতে
দেবাশিস মাইতি
ভেসে যায় কাগজের নৌকো
এক বৃষ্টিভেজা দুপুরে ।
ভরাডুবি খায় অনুভূতিগুলো ।
সবুজ পাতার ওপর জমতে থাকে
ফোঁটা ফোঁটা জল
আর মিশে গিয়ে ঝরে পড়ে
ভারী হয়ে আসা দুচোখের কোণ থেকে ।
কালো মেঘ সরে সরে যায় ,
কিন্তু সরে আর যাবেই বা কোথায় ?
আকাশের নীল যত ফিরে ফিরে আসে
সরে যাওয়া মেঘ ঢেকে দিয়ে যায়
আমার মনের আকাশ দ্বিগুন আক্রোশে ।
তবু বসে থাকি সেই গাছটারই নীচে ।
ভিজে যায় শরীর বৃষ্টির ছোঁয়াতে ।
ঝাপসা চোখ মেলে দেখতে পাই
বৃষ্টিস্নাত হয়ে আসছ তুমি ছুটে ,
আমারই দিকে তোমার ওড়না উড়িয়ে ।
নিজের চোখকে নিজেরই বিশ্বাস হয়না ।
তাই চোখটা ঘষে নিয়ে তাকিয়ে দেখি
আমি ঠিক দেখলাম নাকি ভুল ।
দেখি সে ওড়না নয় সাতরঙা রামধনু
আর তার নীচে ছুটে আসে
এলোমেলো কালো মেঘ
নীল-সাদা ভেলায় ভেসে ভেসে ---
হারানো হৃদয়ের ক্যানভাসে ।
________________ o ________________
কাছে তবু কতই না দূরে
একটা কবিতা আর কয়েকটা ছবি
রোমিও
কাছে তবু কতই না দূরে
দেবাশিস মাইতি
আমি তোমায় দূর থেকে দেখে যাই ---
তুমি থাকো অন্তরে ,
মন ভাবে তোমায় গিয়ে বলি মনের কথা ।
পরে ভাবি ---
এই তো আছি বেশ ভালো ,
তোমায় নিয়ে রচে যাই স্বপ্ন এলোমেলো
যার বিন্দুবিসর্গও তুমি জাননা ,
শুধু আমি জানি ।
আমার জীবনপঞ্জীর ধূসর পাতায়
লিখে রেখেছি তোমার নাম
সাদা কালি দিয়ে ।
তাই তুমি পড়তে পারনা আমার হৃদয়ের কথা ।
তাও সয়ে যাই ---
তোমায় চোখের সামনে দেখতে তো পাই ।
তোমার সাথে কথা বলা হয়নি কখনও ।
হয়তো তুমি চিনতে পারবেনা আমায় ,
চলে যাবে পাশ দিয়ে
আমার বুকে হিল্লোল তুলে
তুমি উদাসীন , চেতনাবিহীন ।
কিন্তু তোমার ঐ অবচেতন মনে
তুমি যে আমার জীবনে
হয়তো আনমনে জ্বালিয়ে দিলে
কি ধূপের কাঠি যার গন্ধ
আমায় আজও তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়
শুধু কাছ থেকে তোমায় একটিবার দেখবার জন্য ---
চিরকাল তুমি এভাবেই কাছে থেকো ।
_________________ o __________________
এবার প্রেম
এবার প্রেম
দেবাশিস মাইতি
তুমি বলেছিলে , ভোরের আলো গায়ে মাখলে
তোমার সারাদিন ভালো কাটে ,
লালচে রোদে হলুদ শাড়ি সবুজ ধানের ক্ষেতে ।
তুমি চেয়েছিলে সকালবেলায়
গাঁয়ের মন্দিরে পূজো দিতে ,
ইচ্ছেমতন দু-তিনখানা বর চেয়ে নিতে –
তুমি প্রশ্ন করেছিলে , দুপুরে সূর্য কি
তার রাগ কমাতে পারেনা ?
দেখো , আকাশে মেঘ করেছে , জল আর ধরেনা ।
তুমি বলেছিলে , বিকেলে আমরা
নদীর ধারে বেড়াতে যাবো –
দেখো , চরে কত ফুল ফুটেছে , খোঁপায় লাগিয়ে দেবো ।
তুমি ভেবেছিলে , গোধূলি কাটবে
খুবই বিরক্তিকর ভাবে ,
দেখো , আলো –আঁধারিতে পাখিরা সব
বাড়িতে ফিরে যাবে ।
তুমি বললে , এ কোন্ সন্ধ্যে !
চাঁদ হারিয়ে গেলো কোনখানে ?
আমি বললাম , হারাবে কেন ,
এই তো আমার সামনে ।
তুমি বললে , এত রাত হল ,
কোথায় গেলো আকাশের তারা ?
আমি বললাম , পর্দা ঢেকে দিয়েছি ,
আমাদের প্রেমে ওরা ভাগ বসানোর কারা !!!
_______________ o _____________
/* এই কবিতটা লেখার পর আমার রুমমেট কুমারজিৎকে পড়িয়েছিলাম , তখনই কবিতাটা ওর ভাবনার সাথে মিলে গিয়েছিল , তারপরের ইতিহাস প্রায় সবারই জানা । একটাই দুঃখ , কবিতাটা আমার কোনোদিন কোনো কাজে লাগলনা । যেখানেই প্রয়োগ করেছি ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে । এরপরেও যদি কারও উপকারে লাগে তো খুশি হব । */
ছিল বান্ধবী হল প্রেমিকা
দেবাশিস মাইতি
তুই যখন থাকিস আনমনে ,
দেখেছি তোর চোখে অদ্ভুত গভীরতা ।
তুই যখন কিছু ভাবিস একমনে ,
দেখেছি তোর চোখে একনিষ্ঠ প্রগাঢ়তা ।
হয়তো বলবি আমি শুধুই বন্ধু তোর ,
আমিও ধরে রেখেছি সে বন্ধুত্বের জোড় ।
কিন্তু কতদিন আর শুধু বন্ধু হিসাবে থাকি !
জানি তুই ভালো বন্ধু আমার ,
তাই তোকে বলতে পারছিনা আর
বন্ধু নয় , আমি আজ তোকে অন্য চোখে দেখি ।
জানিনা কিভাবে তোকে বলব সে কথা ,
সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার ভয় আমি পাই ।
কিন্তু বন্ধুত্ব আমার প্রেমে রূপান্তরিত ,
হৃদয়ের ইচ্ছা আমি কিভাবে চেপে যাই !
এই নির্মোঘ বাস্তবে আমার সমস্যা একটাই ,
আমি কি করে বোঝাই তোকে কতটা আমি চাই ।
তুই যখন বলিস কিছু কথা
আমি তোর দিকে উদাস হয়ে তাকাই ,
তোর ঠোঁটের আলতো ভাষায় আমি
জানিনা কোন্ স্বপ্নের দেশে যাই ।
আমার যে কি অনুভূতি আমিই শুধু জানি ,
তোকে বলব কিভাবে তুই যে বড়ই অভিমানী ।
তবুও চাইনা আমাদের বন্ধুত্ব হয়ে যাক নষ্ট ।
হয়তো আবার সেটাই আমি চাই ,
যদি বন্ধুকে প্রেমিকারূপে পাই
শুধু তখনই পাবনা বন্ধু হারানোর কষ্ট ।
মনের কথা আমি তোকে স্পষ্টভাবে বলি ---
কোনো ভনিতা নয় আমি তোকে ভালোবাসি ,
এটা শুনে তুই যদি সম্পর্ক না রাখিস ,
পরোয়া করিনা , কারণ আমি তোকেই ভালোবাসি ।
তুই ঠাট্টা ভেবে দিসনা উড়িয়ে কঠিন সত্য এটাই ,
হয়তো বোঝাতে পারছিনা এখনও , তোকে কতটা আমি চাই !!!!
___________________ o _________________________
বাঙালী ভ্যালেন্টাইনস্ ডে
দেবাশিস মাইতি
ভেবেছিলাম বিদ্যে
পাব তোমার আরাধনায়,
শুভ্র বেশে তোমায়
দেখে মন হবে কুসুমিত ।
নিষ্ঠাভরে তোমার
চরণে দেব মা অঞ্জলি,
জ্ঞান-শিক্ষা-আলোয়
হবে আগামী বিকশিত ।
শুধু এটুকুই তো
ছিল মনে ;
এভাবেই তো তোমার
চরণে
করেছি পুষ্প নিবেদন
বছরে একদিন,
বইপত্র ছুটি দিয়ে সাময়িক স্বাধীন
---
এভাবেই তো . . . . . . . .
কিন্তু হঠাৎ দেখি
বছর কয়েক পাল্টে গিয়েছে পরিস্থিতি ।
শাড়ির ভাঁজে ঝাড়ি
মারার হাজারো প্রয়াস,
একটু উঁকি, একটু
ঝুঁকি, ‘পেছন ফিরে দেখল নাকি ’ !
চুল সরিয়ে কপাল থেকে আড়চোখে আভাস ।
আর পারিনা ---
মাগো তোমার প্রতি মনঃসংযোগ এরা
করতে দেবেনা ।
যেদিকে তাকাই দেখি লাল-নীল-হলুদ-সবুজ
পরীরা যাচ্ছে ভেসে ভেসে,
হয়তো তোমায় খুঁজতে গিয়ে হারিয়ে
ফেলেছে রাস্তা;
নাকি প্রকৃত ভক্ত খুঁজতে তোমাকেও
পথেই নামতে হবে !
তুমি কি মা প্রেমের দেবী ?
নইলে সবাই কেন ঘুরছে আজ হাত ধরাধরি
করে !
পারলে তোমার হাত থেকে বই সরিয়ে
এরা লাল গোলাপ ধরিয়ে দিতো ---
হয়তো তাই দেবে আর কয়েকবছর বাদে,
সরস্বতীপূজো হয়ে গেছে বাঙালী
ভ্যালেন্টাইনস্ ডে ।
________________________ o ____________________________একটা কবিতা আর কয়েকটা ছবি
দেবাশিস মাইতি
তোমার কালো চুলে
ঢেকে থাকা ব্যস্ত কানের দুল
আর চোখে ভাসে
স্বপ্ন নাকি আমার বোঝার ভুল ---
শুধু একবার ছুঁয়ে
দেখা গেলে থাকতনা সন্দেহ,
একরাশ মিথ্যে
আঁকড়ে ভাবি তুমি আমি একদেহ ।
জানি চাইলেই তো
আর সবকিছু পাওয়া যায়না ।
তবু যাকিছু আমার
ছিল সেটুকু খোয়ানোর গ্লানি,
একটা মেঘলা
বিকেলে শেষ সূর্যের ঝলকানি,
তোমার ব্যালকনির
ঘেরাটোপ ডিঙানোর সাধ্য আমার নেই ---
তাই নদীর ধারে
আমি হাঁটব একা,
তুমি চাইলে
বারান্দায় দাঁড়িয়ে থেকো,
তোমার ওড়নার
ফাঁসে আমায় আর জড়িয়োনা,
জানি তোমার হাতেই
লেখা আমার মৃত্যু পরোয়ানা ।
তোমার চোখের ওপর
চোখ রেখে হারিয়ে যাওয়ার ক্ষণ,
আমি হাতড়ে বেড়াই
অন্ধকারে, খুঁজি তোমার মন ।
তোমার আলতো
ছোঁয়ায় নতুন করে খুঁজি নিজেকে,
আমার ছেঁড়া জামা নেকড়া হয়ে মুছে দেয় মেঝে ।
আর বৃষ্টিভেজা মাটির গন্ধে ঘাস ছুঁয়ে যায় ফড়িং,
পেটের টানে
অরণ্যের বাঘ খুঁজে বেড়ায় হরিণ,
তাই আজও আমি তোমার
টানে নদীর ধারে যাই
আর স্রোতের জলে
নিজের ছায়ায় সান্ত্বনা খুঁজে পাই ।
তুমি বেশ করেছ
অবশ মনে দিয়েছ তোমার সব ---
তাই আঘাত দেওয়া
তোমারই সাজে,
আমি দশটা-পাঁচটা
কাজে যতই ডুবে থাকি তবু
যেন একটা কিছু
আজও বুকে বাজে ।
তুলির টানে হলুদ
ফড়িং চুমু খেয়ে যায় ঘাসে,
আমার রংচটা বইয়ের
পাতায় মোনালিসা হাসে,
গাছের পাতায় ছায়া
খোঁজে নীড়হারা দুই পাখি,
আমার দমবন্ধ করে
তুমি বাঁধলে হাতে রাখি ।
_____________ o _____________
তুমি আছ তাই
দেবাশিস মাইতি
ভাঙা টালির ফাঁক
দিয়ে আধফালি চাঁদ
আবছায়া আলো ফেলে
যায়,
আর ভোরের প্রথম
আলো চুপিসারে এসে
নাড়া দেয় চোখের
পাতায় ।
তবু ঘুম ভেঙে যখন
তোমায় চেয়ে দেখি,
ভুলে যাই রাতের
সে চাঁদ ---
জানি মেটাতে
পারিনি আমি এতটুকু সখ,
দিতে পারিনি মাথা
গোঁজার ছাদ ।
তোমার নরম হাতের
আলতো ছোঁয়া,
একটা সিগারেটের
ধোঁয়া,
বাঁচিয়ে রেখেছে
আমাকে ---
নইলে কবেই হয়তো
যেতাম চলে,
সব সীমা ছেড়ে তেপান্তরে,
শূণ্যতা ভরে
দিতাম দুহাতে ।
সারাদিন কাজের
মাঝে ডুব দিয়ে থাকি,
ঝেড়ে ফিরি
রাস্তার ধূলো
আর দিনের শেষে তোমার
আদিখ্যেতায়
বালিশ থেকে বেরোয়
তুলো ।
তবু এইটুকু
স্পর্শ তুমি দিলে বলে
আজও হাতে ধরা নেই
হারিক্যান,
রাতের নিয়ন আলো
চোখ টিপে বলে
তোমার ঘুম ভাঙায়
সিলিংফ্যান ।
তোমার গভীর রাতের
শরীরি ভাষা,
একটা মায়াবী
নেশা,
জাগিয়ে রেখেছে
আমাকে ---
নইলে কবেই হয়তো
গভীর ঘুমে,
চোখের পর্দা আসত
নেমে,
বিদায় জানাতাম
তোমাকে ।।
_______________ o _____________
রোমিও
দেবাশিস মাইতি
তবু তুমিই এখনো
আছ আমার মনে,
কিছুটা হলেও আছ ।
তোমার ছেড়ে যাওয়া
জায়গাটা
আমি আর একা
একজনকে ছিনিয়ে নিতে দিইনি,
যদি সেও আঘাত
করে, তবে আমি কার কাছে যাব ---
তাই এবার
ভালোবাসাটা বিলিয়ে দিলাম
আরও অনেকের মাঝে
---
দেখলাম এটাই বেশ
ভালো ।
এর কিছু মিষ্টি SMS
ওকে,
ওরটা তাকে, তারটা
একে পাঠিয়ে
দিব্যি চালিয়ে
যাচ্ছি,
কেউ টেরও
পাচ্ছেনা – শুধু ভেতরে ভেতরে দগ্ধ হচ্ছি আমি
আর আমার মুখোশে
ঢাকা ভালমানুষি সত্ত্বা ।
জানিনা এ মিথ্যের
ঘেরাটোপ থেকে কবে বেরিয়ে আসব ।
হয়তো এভাবেই
একদিন ধ্বংস হয়ে যাব আমি ---
নাকি এটাই আসলে
নতুন প্রেমের সংজ্ঞা
Always have a Best Possible
Replacement.
এই মন পরিবর্তনের
যুগে কখন কি হয় কে বলতে পারে !!!
OK......Bye......Take care.....have
a nice day........ :)
_________________o_______________
বয়সের দোষ
দেবাশিস
মাইতি
তোমায় না পাওয়ার আনন্দটা
তোমায় পেয়ে হারানোর থেকে শতগুনে ভালো ।
তুমি বলবে, এসব পরাজিতদের
মনগড়া সান্ত্বনামাত্র –
সে তুমি বলতেই পারো ।
তবে ভেবে দেখলাম,
দূরে থাকলে
তোমায় নিয়ে যতটা ভাবি,
কাছে এলে ভাবনাগুলো
কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যায় ।
তোমার চোখে চোখ রেখে
হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে,
না, কোনো নীল সমুদ্রে নয়,
ধূসর পাহাড়ের বুকেও নয় –
আমার চিলেকোঠার চার দেওয়ালের মাঝে,
যেখানে থাকবে শুধু তুমি আর আমি
আর আমাদের সুখের মুহূর্তগুলো ।
হয়তো তুমি আপত্তি করবে,
হয়তো কেন সত্যিই আপত্তি করবে ।
সেজন্যই তো আমার ভাবনাগুলো
ভাবনা হয়েই রয়ে যায়
আর মুখবুজে পচে মরে
ডায়েরীর পাতায় ভীষন ভয়ংকর
অপরিপূর্ণ মনোবাঞ্ছারূপে –
এই কবিতাও তেমনই একটা ।
তোমার ছায়াকে জড়িয়ে ধরে
আলিঙ্গন করার মতো ।
থাক, এর বেশী না বলাই ভালো –
নিজেকে চরিত্রহীন করতে কারইবা ভালো লাগে !!!
________________ o _________________ভাই, এই Video-টা দেখে inspired হয়ে কবিতাটা লিখেছি , তাই কবিতাটা পড়ার আগে তোরা এই Video-টা দেখে নিলে ভালো হয় ------------ আর আমার বাস্তব জীবনের সাথে কবিতাটার কোনো সম্পর্ক নেই ------------ নিতান্তই Video-টা দেখে Inspired হয়ে খিল্লির Mood-এ লেখা ।
Ye Saali Zindegi
জীবনটা শালা একঘেয়ে হয়ে গেছে –
তুমি –আমি , আমি –তুমি আর কিবা আছে !
সেই একই মুখ দেখতে দেখতে ক্লান্ত ,
এই তোরা কেউ আরেক বোতল আনত ।
আমি আর পারছিনা একতরফা মানিয়ে নিতে ,
এর থেকে সহজ ছিল রেল লাইনে বডি দিতে ।
এই কি শালা প্রেম করার মানে !
আগে বাঁশ পরে বাঁশ সামনে –পেছনে ।
কে তুমি নন্দিনী , ভেবেছো আগে দেখিনি –
অনেক দেখেছি পারো , এবার রক্ষা করো ,
আমি হতে চাইনা তোমার নতুন দেবদাস –
আরও সূচাগ্র করো তোমার আঁছিলা বাঁশ ,
আবার নতুন কোনো শিকারের তরে ,
আমি তোমায় চিনে গিয়েছি হাড়ে –হাড়ে ।
তুমি সেই জটিল রাশির ভগ্নাংশ ,
জ্বালিয়ে খেলে আমার হাড় –মাংস ।
কোনো ঐকিক নিয়মে তোমার মন বোঝা দায় ,
Integration , derivative সবই নিরুপায় ।
তোমর পেছনে ঢালতে ঢালতে আমার
Bank Balance খালি ,
এরপরেও তুমি যেতে চাও বকখালি !
আর কত বকবাচ্চা করবে আমায় !
প্রেমের আঘাতে এবার সত্যিই চলে যাব কোমায় ।
আর একবার যদি ফিরে আসি সেখান থেকে –
আমার দুঃস্বপ্নেও যেন আর না দেখি তোমাকে ।।
________________ o _________________
সপ্তম আশ্চর্য
দেবাশিস মাইতি
তুই মানুষ না তার
থেকেও বেশী কিছু – আমি জানিনা,
তুই আমার মতো
বাউন্ডুলের কাছে ভগবানের নজরানা ।
হয়তো ভেসে যেতাম
অন্ধকারের চোরাস্রোতে তোর দেখা না পেলে,
তোর আদর্শই আজ
আমার কাছে নতুনভাবে বাঁচার প্রেরণা ।
…………………
ধুস্, আমি এখানে
কোনো গান লিখতে বসিনি ।
এবার যা বলব সেটা
কঠিন বাস্তব ---
আমার কবিতাগুলো
একটাও মনগড়া নয়,
সবগুলোই নিজের
জীবনের উপলব্ধি থেকে লেখা ।
নিজের জীবনকে
নিয়ে আমি রীতিমতো
ছেলেখেলা করে
গেছি শুধু বাস্তব অভিজ্ঞতা
থেকে কবিতা লিখব
বলে ।
আমার কবিতায়
প্রেমের থেকে বিরহ বেশী,
কারণ – মেয়েদের
মনের সাথে কোনোদিন
নিজেকে খাপ
খাওয়াতে পারিনি ।
জীবনে চলার পথে
বিভিন্ন সময়ে
সাতজন নারী আমার
জীবনকে
নানাভাবে নাড়িয়ে
দিয়ে গেছে ---
সুদেষ্ণা, দেবজিতা,
দেবরূপা, সুতমা, ইপ্সিতা, তুলিকা আর ____ ।
নিজেকে আজ তাই
সপ্তম আশ্চর্য বলেই মনে হয় ।
এরা হয়তো কেউ
প্রেম দিয়েছে, কেউ নিয়েছে,
কারও সাথে
দেওয়া-নেওয়া দুটোই হয়েছে,
কেউবা কেবল
ছায়াসঙ্গী হয়েই থেকে গেছে ---
কিন্তু দিনের
শেষে এরা কেবল আমার
কবিতা লেখার
অনুপ্রেরণা মাত্র ।
কিন্তু এতসবের
মাঝে যেটা নীরবে হয়ে যাচ্ছিল
সেটা হল নিজেকে
ক্রমশঃ ধ্বংসের পথে নিয়ে যাওয়া ।
ইঞ্জিনিয়ারিং-এর
ছাত্র, তাই কিছু গুন তো থাকবেই;
মদ-গাঁজা-ডেনের
নেশা তিলে তিলে আমায়
ঠেলে দিচ্ছিল
মৃত্যুমুখে, আজও হয়তো দিচ্ছে ---
কিন্তু একজন আমার
জীবনের চিন্তাধারা হঠাৎ বদলে দিয়েছে ।
সে আমাকে প্রেম
দেয়নি,
সত্যি বলতে তার
প্রেম চাওয়ার যোগ্যতা আমার নেই ।
বলে রাখি – সেও
ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্ট ;
কিন্তু আর পাঁচটা
ছেলে-মেয়ের মতো
স্রোতের
হাওয়ায় গা ভাসিয়ে দেওয়া মেয়ে সে নয় ।
ছোটোবেলা থেকেই
সে নিজেকে যুক্ত রেখেছে
সমাজসেবার কাজে –
সে সেবার তালিকাও দীর্ঘ ।
আমার মতো প্রেম
নিয়ে খেলা করে
কবিতা লিখতে
চাওয়া ছেলে তার সাথেও
হয়তো ওই একই খেলা
খেলতে চেয়েছিল ---
কিন্তু আজ আমি
তার মূল্যবোধের কাছে তুচ্ছ হয়ে গেছি ।
তাই আমি আজ আর
তার প্রেম প্রত্যাশা করিনা ।
তাকে ধন্যবাদ
জানাই আমার জীবনের চিন্তাধারাটা পাল্টে দেওয়ার জন্য,
আমায় আবার নতুন
করে পথ দেখানোর জন্য ---
তোমরা হয়তো জানতে
চাইবে কে সেই জন ?
থাকনা সে কথা, সে
নিজেই চায়না কেউ জানুক তার নাম,
সে কেবল নীরবেই
কাজ করে যেতে চায় মানুষের জন্য ---
আমার জীবনে সাত
নম্বর নারীর শূণ্যস্থানটা তাই তারই জন্য রাখা ,
এ কবিতার প্রথম
চার লাইনও তারই জন্য লেখা ।
___________________
o __________________
আলো-আধাঁরি
দেবাশিস মাইতি
আমি আড়ালে থাকতে
চেয়েছিলাম, অন্ধকারে নয় ---
যেখানে আলো
থাকবে, কিন্তু আমি হব একা,
আয়নার সামনে
নিজেকে বারবার ফিরে দেখা,
আমার মুখোমুখি
শুধু আমি, ভাঙাচোরা আমি ।
আবেগের সাতকাহনে
কিছু ভুলতে চাওয়া মুখ
কেড়ে নিয়েছে
অনেককিছুই, পাইনি যা চেয়েছিলাম
নিজের করে নিতে, কার
দোষ-কি ছিল উপায়
জানতে চাওয়া
বৃথা, দিনের শেষে একাই ছিলাম
একাই থেকে গেছি
আর তাই এখন
আমার মুখোমুখি
শুধু আমি, কোনঠাসা আমি ।
তবুও আমার আড়ালে আর
থাকা হলনা,
তলিয়ে গেলাম
বিনিদ্র অন্ধকারের পাঁকে ---
যেখানে আগে থেকেই
দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে
আমারই মতো কিছু
অন্ধকারের যাত্রী,
আমিও যোগ দিলাম
তাদের দলে আর সেখানেও
আমার মুখোমুখি
শুধু আমি, নেশাগ্রস্ত আমি ।
এই নেশাই উগরে
দেয় কিছু ছাইচাপা সত্যিকে,
ভাবি আবার ফিরে
পাব কারও মধ্যে তাকে,
নতুন করে ঝাঁপিয়ে
পড়ি নতুন উদ্যোগে ---
কিন্তু সেও কেবল
সান্ত্বনা দেয়, বেরিয়ে আসতে বলে
অন্ধকারের গলি
ছেড়ে, কিন্তু নতুন পথের দিশা
সেও পারেনি
দেখাতে, তাই আলোর খোঁজে ছুটতে গিয়ে
আমার মুখোমুখি
শুধু আমি, দিগ্ভ্রান্ত আমি ।
___________________
o _________________
/* কেউ যেন মনে না করে যে এই কবিতাটা তাকে উদ্দেশ্য করে লেখা */
মায়াজাল
দেবাশিস মাইতি
আর চোখ তুলে তাকাতে পারিনা তার দিকে ,
কোন্ অপরাধে যে অপরাধী আমি ,
জানা নেই আজও , শুধু জানে অন্তর্যামী
কোনো দোষ ছিলনা আমার ।
ভালোবেসেছিলাম তাকে মনের অজান্তে ,
বলে ফেলেছিলাম তাকে প্রেমের কথা ,
অবিশ্বাস-ঘৃণা আর বুকে নিয়ে ব্যাথা
সে বন্ধুত্বও রাখলনা আমার সাথে ।
বলো আমি এখন কি করি ---
প্রেম কি শুধুই এক গোপন দীর্ঘশ্বাস !
ভালোবাসি , একথা তাকে বলতে পারব না !
একতরফা ভালোবাসা কি কোনো ঘৃণ্য অপরাধ ?
তবে সে কেন মুখ ফিরিয়ে নিল আমার থেকে ,
অন্তত বন্ধুত্বটুকুও রাখলনা ।
অবশ্য না রাখাই ভালো ---
কে আর দেখতে পারে তার ভালোবাসা
এক পরিযায়ী পাখি হয়ে
নিরন্তর সুখের ঠিকানা বদল করে চলে ।
যাক সে উড়ে দুই ডানা মেলে
দুচোখ যেদিকে যেতে চায় ।
ক্লান্ত একদিন সবাইকে হতে হয় ।
দেখি সে কোন্ ঠিকানা খোঁজে সেদিন
চূড়ান্ত বিশ্রামের তরে ।
আমার ব্যাথা আমার বুকে গুমরে কেঁদে মরে ।
সে যেন ভালো থাকে – এই কামনা করি ,
এর বেশী আমি আর কি চাইতে পারি ।
__________________ o ____________________
দেবাশিস মাইতি
একা একা আমি হেঁটে চলে যাই ,
প্রকৃতির বুকে ঠিক খুঁজে নেব ঠাঁই ,
যাবনা ফিরে আর তোমার আশ্রয়ে ,
মুছে যাওয়া হৃদয়ের খাতায় ।
সুদে-আসলে তোমার অনেক পাওনা বাকি ,
জ্ঞানে-অজ্ঞানে আমি দিয়েছি করে ফাঁকি ,
তোমার অনেক চাহিদা ছিল মেটাতে পারিনি
বোবা শারীরিক স্নিগ্ধতায় ।
তথ্য হিজিবিজি , চাইলে তবু রাজি ,
ভাবছি নতুন করে হাঁটছি মোহনায় ।
একা থাকার অসুখে , বন্য পশুকে
দিয়ে করাব কাঁটাতার ভাঙার অন্যায় ।
ভেবোনা কিছু ভুল , আগে দেব ফুল ,
লাল না সাদা নেবে তোমার ইচ্ছে -----
আগে তো পাই দেখা , নিয়ন্ত্রন রেখা
ভাঙার ঈঙ্গিত না পাপড়ি খসে যাচ্ছে ।
ভেবে নেব তবে চাইছনা তুমি আমায় ,
গাছ থেকে পাখি কিছু ফেলল সাদা জামায় -----
নদীতে ধোব জামা আর ধুয়ে নেব মন ,
কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে ফালতু এ জীবন -----
পিছলে গেলে পা চুকে যাবে সব হ্যাপা ,
চেয়ে নেব সাঁতার না জানা শেষ ক্ষমা ।
জলজ বাস্তুতন্ত্রে মিশে যাব রন্ধ্রে রন্ধ্রে ,
ভেসে শুধু থকবে সাদা জামা -----
_______________ o _____________
Oye,tui amake niye ekta kobita likhechhili na? amake khub jaliyechhilio.. konta seta?
ReplyDeletemaiti re maiti.....offf...osomvob...
ReplyDeletenutun kichu update din
ReplyDelete